মানিক, বিভূতি, তারাশঙ্কর যেমন মুখে মুখে ঘোরে বাংলা উপন্যাসের পাঠকের; সতীনাথ ভাদুড়ী সেদিকে যেন বিহার জেলার মতোই দূরে, চট করে তাকে স্মরণ করাটা কঠিন। ফলে এমন দেখেছি অনেক, যে অনেক পাড়া মাড়িয়ে আসা পাঠকেরও সতীনাথকে আবিষ্কার করতে সময় লাগে। তবে বিলম্বে হোক, বা দ্রুত; যখন পাঠক পড়েন সতীনাথকে; বিস্ময়ের এক প্রচন্ড থাবড়া খেয়ে তাকে সোজা হয়ে বসতে হয় তখন। এমন লেখকও আছেন? এভাবে, অ্যাতো নিস্পৃহ থেকে, অ্যাতো অচঞ্চল থেকে, নিজেকে এমন আড়ালে রেখেও তবে উপন্যাস লেখা যায়? সেই পাঠককে তাই প্রচণ্ড ঈর্ষা হয় আমার, যিনি সতীনাথ ভাদুড়ীর উপন্যাস পাঠ করবেন প্রথমবারের মতো।
Tag: সতীনাথ ভাদুড়ী
উপন্যাসের প্রথম বাক্যটা লেখাই নাকি সবচেয়ে কঠিন। সম্ভাব্য পাঠককে বাস্তবের জগত থেকে শব্দ আর কল্পনার জগতটায় সরিয়ে নিয়ে যেতে যে টোপগুলো লেখক ছাড়েন, উপন্যাসের শুরুটা নাকি তার মাঝে সবচাইতে গুরত্বপুর্ণ। ক্যামন ধরনের যাত্রায় নামতে যাচ্ছে পাঠক, প্রথম বাক্যে থাকা লাগে সেটার একটা ইঙ্গিত, থাকতে হয় লেখকের ভাষা কি ভঙ্গির সাক্ষর, আর সাথে অবশ্যই প্রয়োজন পাঠককে আকর্ষণ করবার ক্ষমতা।
আর সেরা উপন্যাসগুলো আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়, যে উলটো দিক থেকেও ব্যাপারটা সত্য। মানে পাঠকও যদি প্রথম বাক্য থেকেই আটকা পড়ে যায় লেখকের সাথে, তবে সেই উপন্যাস তার মনে একটু গভীরতর দাগই কাটে। বহুদিন পরেও তখন তার মনে ঘুরেফিরে আসে উপন্যাসের শুরুটা।