(১)
জীবনানন্দ দাশের কবিতায় ডুবে গিয়ে অল্পবিস্তর যারা চোখ রেখেছেন কবির ব্যক্তিগত জীবনেও, লাবণ্য দাশ তাদের কাছেও পরিচিত এক নাম। নিজেকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে এমন এক বিপন্ন বিস্ময়ের অনুসন্ধান জীবনানন্দ করে গেছেন, সমকালের চেয়ে পরবর্তী কালেই মানুষ সেটার সাথে সংযোগ স্থাপন করেছে অধিক। সময় কেটেছে, এবং জীবনানন্দের ছায়া হয়ে উঠেছে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর। অগণিত বাংলাভাষী পাঠক, আজও তারা হাজার বছর ধরে পৃথিবীর পথে হেঁটে চলার ক্লান্তি আবিষ্কার করে যাচ্ছে জীবনানন্দের কবিতায়। নিশ্চিত জানি, ‘কবি’ শব্দটা শুনলেই যে করোটির ভেতরে কোথাও অনুরণন তোলে জীবনানন্দ দাশের নামটা, সে ব্যাপারটা কেবলই আমার ব্যক্তিগত নয়।
অথচ গণমানুষের হৃদয়ে কবিপত্নী লাবণ্য দাশ রীতিমতো এক অসংবেদনশীলতার পিরামিড। জাগতিক বিষয় ভুলে সংসার উদাসীন থাকার যে রোমান্টিক বুদবুদ কবির চারপাশে বুনতে ভালোবাসে ভক্ত দল, জীবনানন্দকে সেটার উদাহরণ হিসেবে টানলে পরীক্ষার পাতায় দশে সাড়ে নয় পাওয়াটাও সম্ভব। কিন্তু পশ্চিমের মেঘে সোনার সিংহ আবিষ্কার করা জীবনানন্দের বিপরীতে তার স্ত্রী লাবণ্যের কুঁচো চিংড়ি কেনার দৈনন্দিন জীবন হয়ে উঠেছে পাঠকের চক্ষুশূল।