প্রায়ই এমন হয়, উপন্যাসের পাতা থেকে এক-একটা কথা আমাদের মনের ভেতর যেন মূর্তি হয়ে বসে। কোনো এক প্রখর গ্রীষ্মের দুপুরে ওভাবেই মাহমুদুল হক আমার ভেতরে গড়ে তুলেছিলেন একটা আস্ত অজন্তা ইলোরা। বলেছিলেন –

আসলে জীবন মানেই শৈশব; জীবনভর মানুষ এই একটা ঐশ্বর্যই ভাঙ্গিয়ে খায়, আর কোনো পুঁজিপাট্টা নেই তার।

আলবেনিয়ার ঔপন্যাসিক ইসমাইল কাদারের ক্রনিকল ইন স্টোন পড়তে বসে ঘুরে-ফিরে কেবল ওই কথাটিই মনে পড়ে। বিষয়ে গম্ভীর অথচ বয়ানে সরল এই উপন্যাসের পাতায় পাতায় বহুবার অনামা এক বালকের ভেতর দিয়ে নিজের শৈশবকে উদ্ধার করেছেন কাদারে, বোঝা যায়। শৈশবকে পুনরুদ্ধার করবার ক্ষমতা খুব বেশি লেখকের থাকে না। আর এটাও আমাদের জানা, যে গড়পড়তা মানকে ছাড়িয়ে গিয়ে তিনিই হয়ে উঠতে পারেন অনন্য লেখক, যিনি ব্যক্তির ভেতর থেকে তুলে আনতে পারেন কোনো সমাজ বা রাষ্ট্রকে। দুটো শর্তকেই পূরণ করতে পেরেছেন বলে, ক্রনিকল ইন স্টোন উপন্যাসের শেষে ইসমাইল কাদারে’র দিকে পাঠককে তাই তাকাতে হয় নতুন মুগ্ধতায়।