লেখালেখি

Tag: আখতারুজ্জামান ইলিয়াস

ইলিয়াসের ইনসেপশন

(১)
আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ‘খোয়াবনামা’ প্রথম পড়ি এমন এক ধূসর সময়ে, চাইলেও যার স্মৃতি ভোলা সম্ভব নয় আমার পক্ষে।

মনে পড়ে, সিডনি ল্যুমেটের ‘টুয়েলভ অ্যাংরি ম্যান’ দেখার পরে এমন অভিভূত হয়ে যাই, যে সিদ্ধান্ত নেই সেরা কিছু সিনেমা না দেখেই রেখে দিতে হবে; অপঠিত রেখে দিতে হবে সেরা কিছু বইও, যাতে করে ভবিষ্যতে নিজেকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে হলে উপাদানের কমতি না পড়ে। ইলিয়াসের ‘খোয়াবনামা’ আমি তাই ফেলে রেখেছিলাম কোনো দুঃসময়ের জন্য।

তারও আগে বারবার পড়েও ইলিয়াসের ছোটগল্পের প্রতি মুগ্ধতা আমার কিছুতেই যায় না। বইয়ের দোকানে চোখের ভুরুর গিট্টু হয়ে, দাওয়াত খেতে গিয়ে উৎসবে মেতে, অফিস ফেরতা রিকশাওয়ালার শার্ট থেকে ভেসে আসা গন্ধের মাঝে ইলিয়াস নড়াচড়া করেন তার গোটা জগৎ নিয়ে। ‘বলবো না, নড়বো না, করবো না, সেলফি তুলবো কেবল’ সিনড্রোমে ভুগতে থাকা প্রজন্মের একজন হয়ে অনলাইনের ব্যক্তিগত চিলেকোঠায় ওসমানের মতো স্বমেহন করে নিরুপদ্রব জীবন কাটানো এই আমার দরজায়ও হাড্ডি খিজির হয়ে ইলিয়াস অবিরত হাঁক মারেন।

ইলিয়াসের ডায়েরি, অ্যাটউডের স্মৃতিচারণ

লোভী লোকের পক্ষে গল্প লেখা সম্ভব নয়, এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন মাহমুদুল হক। বিতর্কের বিষয় হিসেবে নির্ধারণ করলে উক্ত দাবির উভয় পক্ষেই বোধহয় বলবার মতো বক্তার অভাব হবে না। সেদিকে না গিয়ে যদি নজর করি মায়াবী গদ্যকার মাহমুদুল হকের বক্তব্যের আরেকটু ভেতরে, তাহলে কিন্তু তার কথাটার একটা অর্থ দাঁড়ায়, যে গল্প লেখার জগতেও লোভী লোকেরা ঘোরাফেরা করে।

সত্যি বলতে, হাটে-বাজারে-ময়দানে-দপ্তরে ঘোরাফেরা করা মতলববাজদের মতোই, সাহিত্য জগতেও অনেকে পা রাখেন বিভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে। একটু মনোযোগী পাঠক মাত্রই জানেন, যে সাহিত্য জগতে বিচরণ করা মানুষদের অনেকের ধ্যানজ্ঞানেই লেখাটা খুব বেশি প্রাধান্য পায় না।

Powered by WordPress & Theme by Anders Norén

error: Content is protected !!