পৃথিবীতে আর কোনো উপন্যাস নিয়ে বোধহয় তত আলোচনা হয়নি, যতটা হয়েছে লিও তলস্তয়ের ‘আন্না কারেনিনা’ নিয়ে। তলস্তয়েরই আরেক উপন্যাস ‘যুদ্ধ এবং শান্তি’তে চরিত্রের সমাহার আরো বেশি, তলস্তয়ের নৈপুণ্য সেখানে আরো বেশি রঙ নিয়ে প্রকাশিত; তবু যেন ‘আন্না কারেনিনা’ই আজও একটু বেশি চমৎকার মানুষের কাছে। গ্রেটা গার্বো থেকে একালের কেইরা নাইটলি পর্যন্ত পর্দায় রুপায়ন করতে চেয়েছে আন্না কারেনিনা-কে।
Category: বিশেষ মাসিক প্রতিবেদন
গান ভালোবাসা মানুষের কাছে লিওনার্ড কোহেন যথেষ্ট পরিচিত এক নাম। পৃথিবীজোড়া লোকটার খ্যাতির মূল কারণ বোধহয় এটাই, যে ভূগোল আর সংস্কৃতির গণ্ডীতে আটকে না থেকেই একজন সংবেদনশীল মানুষ কোহেনের গানের মাঝে নিজেকে খুঁজে নিতে পারে। আহামরি কোনো গায়কী কিংবা চটুল যন্ত্রের কারিকুরিময় সুর নয়, কোহেনের গান সোজাসাপ্টা শব্দে ভর করে শ্রোতাকে বরং দেয় নৈরাশ্য; শ্রোতাকে সেটা বলে, পৃথিবীতে আরো অজস্র মানুষ তোমার মতোই বিপন্ন।
গল্প লেখার প্রয়োজনে সৈয়দ হক যখন একদিন আবিষ্কার করলেন যে প্রতিটি গল্পে তাকে কোনো গ্রামীণ জনপদ নিয়মিতই উদ্ভাবন করতে হচ্ছে, তখন তিনি এমন একটা কাল্পনিক জনপদ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিলেন, যেটাকে ব্যবহার করা যাবে তার সমস্ত গ্রামীণ গল্পের পটভূমি হিসেবে। সৃষ্টি হলো সৈয়দ হকের ‘জলেশ্বরী’, নদীতীরের কয়েকটি কাল্পনিক চর নিয়ে গঠিত যে জনপদকে তিনি বহুবার ব্যবহার করেছেন তার গল্প উপন্যাসে। সত্যি বলতে, লেখকের প্রয়োজনে কাল্পনিক জনপদ তৈরির ব্যাপারটা সাহিত্যে নতুন কিছু নয়; আর কে নারায়ণের ‘মালগুঁড়ি’, কিংবা গার্সিয়া মার্কেজের ‘মাকেন্দো’ নামগুলোও কিন্তু দেশ বিদেশের পাঠকের কাছে অতি পরিচিত, লেখকদের বয়ানে সেই জনপদগুলো পাঠকের কাছে হয়ে উঠেছে বাস্তবের চাইতেও অধিক বাস্তব।