লেখালেখি

Category: বইয়ের আলাপ Page 2 of 9

ডিস্টোপিয়া প্রসঙ্গে

০১।
ধরা যাক, অদূর ভবিষ্যতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একদিন হঠাৎ অভ্যুত্থানে বদলে গেলো ‘গিলিয়াড’ নামের কোনো প্রজাতন্ত্রে। তারপর সামরিক জান্তা সেই প্রজাতন্ত্রকে ক্রমশ বদলে দিলো চূড়ান্ত কর্তৃত্ববাদী আর পুরুষতান্ত্রিক এক রাষ্ট্রে। গিলিয়াড রাষ্ট্রে সবচেয়ে নাজুক অবস্থান হলো নারীর, কেড়ে নেওয়া হলো তার সন্তান জন্মদানের অধিকার। দুঃস্বপ্নের এখানেই শেষ নয়, নারীদের এবার কাজে লাগানো হলো কেবল শাসক শ্রেণীর জন্য সন্তান উৎপাদনের কাজে…।

মার্গারেট অ্যাটউডের দুনিয়া-বিখ্যাত ডিস্টোপিয়ান উপন্যাস ‘দা হ্যান্ডসমেইড টেইল’ এর কাহিনি এগিয়ে গেছে এভাবেই, পাঠককে ক্রমাগত অস্বস্তি দিয়ে। কুঁচকানো ভুরু আর মৃদু আতঙ্ক নিয়েও পাঠক কিন্তু ঠিকই পড়ে গেছে কাল্পনিক রাষ্ট্র গিলিয়াডের গল্প, এবং একরকম উপভোগও করেছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, ভবিষ্যতের বিকৃত একটা রুপ দেখানো এই ধরনের কল্প-সাহিত্য (ফিকশন) পড়তে কেন ভালো লাগে পাঠকের? কেন স্বস্তির চাইতে অনেক বেশি অস্বস্তির সম্ভাবনা নিয়ে হাজির হলেও ডিস্টোপিয়ান ফিকশনরা আমাদের আনন্দ দেয়?

কদর্য সব আরব্য রজনী

হাতে জমে থাকা বইয়ের স্তূপ আর ইন্টারনেটে গণ্ডায় গণ্ডায় ঘুরে বেড়ানো মাগনা ই-বই এর দৌরাত্ম্যে যেটা হয়েছে, সদ্য প্রকাশিত বই কেনার ক্ষেত্রে মন ইদানিং অনেক যাচাই-বাছাই করে। নতুন বের হওয়া কোনো বই কিনবো কি না, স্বীকার করি, অনলাইনের নানা প্রতিক্রিয়াও আজকাল ভূমিকা রাখে সেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করায়। এসব হিসাবের বাইরে রাখি কেবল অল্প কিছু লেখককে। তাদের নতুন কোনো বই এলে, সেটা সংগ্রহ করে নিয়ে পড়তে আমার দেরি হয় না। ব্যক্তিগত সেই তালিকার একদম প্রথম দিকেই থাকেন শাহীন আখতার।

জুলাইয়ের দুপুরে জনৈক বইপড়ুয়া

জুলাই মাসের এক সকালবেলায়- দুপুরও হতে পারে- অন্তর্জালে একটা ক্লিক করে আপনি ঢুকে পড়েছেন সুহান রিজওয়ানের লেখালেখির সাইটে, লিংকটা বলছিলো এখানে ইতালো কালভিনোর উপন্যাস ইফ অন আ উইন্টারস নাইট এ ট্রাভেলার’ এর পাঠ-প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাবে।

হ্যাঁ, এই সাইটে আপনি সত্যিই সুহানের লেখাটা পড়তে পারবেন। কিন্তু ধৈর্য্য ধরতে হবে। জানি, কয়েক লাইন পড়ে ফেলার পরেও উদ্দিষ্ট বইটা নিয়ে কিছু খুঁজে না পেয়ে আপনি অধৈর্য হচ্ছেন, সাথে সাথে, নিজের বিচারও আপনাকে ক্রমাগত বলে যাচ্ছে যে এই লেখাটা চট করে স্ক্রল করে পড়া যাবে না। তবে এটা ঠিক, যে বই নিয়ে এই বিচিত্র ভঙ্গীতে লেখা প্রতিক্রিয়া আপনার কৌতূহল জাগিয়েছে, আপনি তাই পড়ে যাচ্ছেন। কিন্তু আপনি এটাও জানেন যে অন্তর্জালে কোনো কিছুতে মন দেয়া কেমন কষ্ট, তাই আপনি ভয় পাচ্ছেনঃ যে এলোমেলো এই লেখা আপনাকে অচিরেই করে তুলবে ক্লান্ত। এসব ফালতু বকুনি আর কতক্ষণ?

কোথাও ডাইনি আজও হতেছে শিকার

১৬৯২ সালের আমেরিকা; সালেম, ম্যাসাচুসেটস। ছোটো একটা শহর, চারিদিকে জঙ্গল ঘেরা। সেই জঙ্গলের মাঝেই একদল কিশোরী মেয়ে নেচে নেচে খেলছিলো একদিন, সাথে ছিলো এক কৃষ্ণাঙ্গ দাসী, তিতুবা। কোনো এক শহরবাসীর চোখে পড়ে যায় এই অতি-সাধারণ দৃশ্যটি। আর তারপর, মানুষের কূটবুদ্ধি আর রাজনীতির প্যাঁচে পড়ে এই তুচ্ছ ব্যাপারটাই হয়ে দাঁড়ায় ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাগুলোর একটা; যা কুখ্যাত হয়ে আছে ‘ডাইনি শিকার’ (Witch Hunting) নামে।

কী ঘটেছিলো ১৬৯২ এর সালেমে?

২০২২ এর বই / কিস্তি ০৩

২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত বইগুলো পড়া শেষে আমার এলোমেলো অনুভূতি গুছিয়ে রাখার জন্য এই ধারাবাহিক (অন্য পর্বগুলো পাওয়া যাবে এইখানে)। আশা করি, এই স্বেচ্ছা-উদ্যোগ চালু থাকবে বছর জুড়েই। আজ এর তৃতীয় পর্ব।

(১) সত্যজিতের শতবর্ষ / হিল্লোল দত্ত

এগুলো ঠিক প্রবন্ধ নয়, গবেষণা নয়, স্মৃতিচারণ নয়, রম্যরচনা নয়; এককথায় বলতে গেলে ব্যক্তিগত রচনা বলা যায় …” – মুখবন্ধে এই সাফাই গেয়েছেন লেখক হিল্লোল দত্ত; সেই হিল্লোল দত্ত- বই কিংবা বই সংক্রান্ত যার বিভিন্ন আলাপ আকর্ষণীয় গদ্যে অনলাইনের নানা জায়গায় পড়ে আসছি প্রায় এক যুগ। সত্যজিৎ-কে নিয়ে হিল্লোলের এই রচনা-সংকলন পড়তে তাই মুখিয়ে ছিলাম, পড়া হলো কদিন ধরে।

২০২২ এর বই / কিস্তি ০২

২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত বইগুলো পড়া শেষে আমার এলোমেলো অনুভূতি গুছিয়ে রাখার জন্য এই ধারাবাহিক। আশা করি, এই স্বেচ্ছা-উদ্যোগ চালু থাকবে বছর জুড়েই। আজ এর দ্বিতীয় পর্ব, এই পর্বে রয়েছে দুটো গল্প সংকলন নিয়ে আলাপ।

(১) তখন গল্পের তরে / রিফাত আনজুম পিয়া

রিফাত আনজুম পিয়ার প্রথম গল্প-সংকলন ‘তখন গল্পের তরে’ হাতে নিয়ে পাতা উল্টাতেই দেখা যায় গল্পকার সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের একটি অদীর্ঘ ভূমিকা। অনুজ লেখকদের উৎসাহ দিতে গিয়ে- সাহস করে বলি- এ ধরনের মুখবন্ধ রচনায় অগ্রজ লেখকেরা সাধারণত কিছুটা অতিরঞ্জন করেই থাকেন। সেই ছোটোলোকি চিন্তা মাথায় নিয়েও সৈয়দ মনজুরুলের বক্তব্যটা পড়তে গিয়ে পাঠক যে চমকে যায়, তার কারণ একটা ব্যক্তিগত উপলদ্ধিঃ অক্ষর কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করে না।

২০২২ এর বই / কিস্তি ০১

২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত বইগুলো পড়া শেষে আমার এলোমেলো অনুভূতি গুছিয়ে রাখার জন্য এই ধারাবাহিক। আশা করি, এই স্বেচ্ছা-উদ্যোগ চালু থাকবে বছর জুড়েই। আজ রইলো এর প্রথম পর্ব, থাকলো দুটো গল্প সংকলন নিয়ে আলাপ।

(১) রাইরিন্তার শেষ উপহার / মাহবুব ময়ুখ রিশাদ

মাহবুব ময়ূখ রিশাদের গল্প পড়ছি বোধহয় প্রায় এক দশক হয়ে গেলো। ব্লগমণ্ডলের পাতা থেকে কাগুজে বইয়ের পাতায় তার যে যাত্রা, বললে অন্যায় হবে না যে সেই বিবর্তনের আমি একজন সাক্ষী। এবং বছরের পর বছর ধরে তাকে অনুসরণ করে আমি এই সিদ্ধান্তে এসেছি যে, রিশাদের লেখা উপভোগ করতে হলে- ঠিক যেমনটা করি হারুকি মুরাকামির ক্ষেত্রে- মনের যুক্তিচালিত অংশটাকে তালাবদ্ধ করে রাখতে হয়। অন্যভাবে বললে, রিশাদের জগতকে আমাদের তখনই ভালো লাগে, যখন আমরা ঘটনার কারণ না খুঁজে ঘটনার স্রোতে নিজেকে ছেড়ে দেই।

Page 2 of 9

Powered by WordPress & Theme by Anders Norén

error: Content is protected !!