গল্প লেখার প্রয়োজনে সৈয়দ হক যখন একদিন আবিষ্কার করলেন যে প্রতিটি গল্পে তাকে কোনো গ্রামীণ জনপদ নিয়মিতই উদ্ভাবন করতে হচ্ছে, তখন তিনি এমন একটা কাল্পনিক জনপদ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিলেন, যেটাকে ব্যবহার করা যাবে তার সমস্ত গ্রামীণ গল্পের পটভূমি হিসেবে। সৃষ্টি হলো সৈয়দ হকের ‘জলেশ্বরী’, নদীতীরের কয়েকটি কাল্পনিক চর নিয়ে গঠিত যে জনপদকে তিনি বহুবার ব্যবহার করেছেন তার গল্প উপন্যাসে। সত্যি বলতে, লেখকের প্রয়োজনে কাল্পনিক জনপদ তৈরির ব্যাপারটা সাহিত্যে নতুন কিছু নয়; আর কে নারায়ণের ‘মালগুঁড়ি’, কিংবা গার্সিয়া মার্কেজের ‘মাকেন্দো’ নামগুলোও কিন্তু দেশ বিদেশের পাঠকের কাছে  অতি পরিচিত, লেখকদের বয়ানে সেই জনপদগুলো পাঠকের কাছে হয়ে উঠেছে বাস্তবের চাইতেও অধিক বাস্তব।

তবে ইসমাইল কাদারের উপন্যাসের জগতের যে আলবেনিয়া, লেখক উদ্ভাবিত হলেও, নিছক সাহিত্যের তাগিদেই সেটার জন্ম হয়নি, আবার পুরোপুরি কাল্পনিকও সেটা নয়। কাদারে নিজে যেমন বলছেনঃ ওই আলবেনিয়া আমি তৈরি করেছি সত্যিকারের আলবেনিয়ার- ঊষর, কুয়াশা ঢাকা, নৈরাশ্যে ঘেরা সমাজতান্ত্রিক আলবেনিয়ার- বিরোধিতা করতেই। ইচ্ছে ছিলো আমার আলবেনিয়া হবে ভূতুড়ে, চিরকালের অনুশোচনা আর অনুতাপে জর্জর; কিন্তু সেই সাথে, সমস্ত অসুরের বিপরীতে একটা পুনরুজ্জীবনের আশাও সেখানে থাকবে …